শবে মেরাজের বিশেষ ফজিলত

শবে মেরাজের বিশেষ ফজিলত, গুরুত্ব ও আমল

শবে মেরাজ হলো ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং মহিমান্বিত রাত। এই রাতে নবী মুহাম্মদ (সা.) মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস এবং সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছান। ইসলামের ইতিহাসে এই ঘটনাটি ঈমান ও আত্মশুদ্ধির অন্যতম অনুপ্রেরণা।


শবে মেরাজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

শবে মেরাজ আরবি ভাষায় “লাইলাতুল মেরাজ” নামে পরিচিত, যার অর্থ “উচ্চে আরোহণের রাত”। এটি হিজরি সালের রজব মাসের ২৭তম রাতে সংঘটিত হয়। কুরআনের সূরা ইসরা এবং হাদিসে এ ঘটনার বিশদ বর্ণনা রয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন:

“তিনি সেই সত্তা, যিনি রাতের এক অংশে তাঁর বান্দাকে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন।”
(সূরা ইসরা: আয়াত ১)


শবে মেরাজের গুরুত্ব

শবে মেরাজ ইসলামের একটি অন্যতম বিস্ময়কর রাত। এটি কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; বরং মুসলিমদের জন্য শিক্ষা এবং ইবাদতের বিশেষ সুযোগ।

  1. নামাজের বিধান প্রবর্তন:
    এই রাতেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলিমদের জন্য ফরজ করা হয়। নামাজ ইসলামের স্তম্ভসমূহের একটি।
  2. আল্লাহর দিদার:
    নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সৌভাগ্য লাভ করেন, যা ইসলামের ইতিহাসে বিরল।
  3. জীবনের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি:
    শবে মেরাজ আমাদের জীবনের পাপ থেকে মুক্তি পেতে এবং সঠিক পথে ফিরে আসার শিক্ষা দেয়।

শবে মেরাজের ফজিলত

১. গুনাহ মাফের সুযোগ:
আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য এই রাতকে বিশেষভাবে রহমতের রাত হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আন্তরিক ইবাদত গুনাহ মাফের একটি উপায়।

২. দোয়া কবুল:
এই রাতে আল্লাহ বান্দাদের দোয়া কবুল করেন। অতএব, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেশি বেশি দোয়া করুন।

৩. আত্মশুদ্ধি:
অতীতের ভুল সংশোধন করে আল্লাহর পথে ফিরে আসার জন্য এটি একটি উৎকৃষ্ট সময়।


শবে মেরাজের বিশেষ আমল

শবে মেরাজের রাতে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য বিশেষ কিছু আমল রয়েছে। সেগুলো হলো:

  1. নফল নামাজ:
    • প্রতি দুই রাকাতে একবার সূরা ফাতিহা এবং সূরা ইখলাস পড়ুন।
    • আল্লাহর দয়া এবং ক্ষমা লাভের জন্য দোয়া করুন।
  2. তাওবা এবং ইস্তেগফার:
    • অতীতের পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
    • ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করুন।
  3. কুরআন তিলাওয়াত:
    • কুরআন পাঠ করুন এবং অর্থ অনুধাবন করুন।
    • এর পাশাপাশি নবী (সা.) এর জীবনী পাঠ করুন।
  4. জিকির ও দোয়া:
    • বেশি বেশি জিকির করুন, যেমন “আল্লাহু আকবার”, “সুবহানাল্লাহ”, “আলহামদুলিল্লাহ”।
    • মুসলিম উম্মাহ এবং নিজের পরিবারের জন্য দোয়া করুন।

Subscribe for latest updates

Subscription Form